সোমবার, ২৯শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, রাত ১২:১৩

শিরোনাম :
প্রচার-প্রচারণায় ভোটারদের মন জয় করছেন ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী জসিম যারা আমার জন্য কাজ করেছে আমি তাদের রেখে কখনো পালিয়ে যাইনি-এসএম জাকির হোসেন রেমিটেন্স আহরণে রূপালী ব্যাংকের ২ দিন ব্যাপী ক্যাম্পেইন সম্পন্ন সদর উপজেলা নির্বাচনে ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী জসিম উদ্দিনের মনোনয়ন বৈধ ঘোষনা বরিশালের দুই উপজেলায় বৈধতা পেলেন ২৫ প্রার্থী ঝালকাঠিতে বেপরোয়া ট্রাক কেড়ে নিল ১৪ প্রাণ বরিশাল সদরে ভাইস চেয়ারম্যান পদে হাদিস মীরের মনোনয়ন দাখিল বরিশালে তীব্র গরমে নাভিশ্বাস জনজীবন,বিপাকে নিম্ন আয়ের মানুষ! বরিশাল সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ভাইস চেয়ারম্যান পদে জসিম উদ্দিনের মনোনয়নপত্র দাখিল বরিশাল সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে এসএম জাকির হোসেনের মনোনয়নপত্র দাখিল
নিয়ম ভঙ্গ করিয়া আবাসিকে গ্যাস সংযোগ

নিয়ম ভঙ্গ করিয়া আবাসিকে গ্যাস সংযোগ

dynamic-sidebar

নিষেধাজ্ঞার মধ্যেও তিতাস গ্যাস বিতরণ কোম্পানি আবাসিকে গ্যাস সংযোগ দিয়া আসিতেছে। বিষয়টি নিয়া ইতিপূর্বে নানা সমালোচনা উঠিলেও ইহার কোনো সুরাহা হয় নাই। ২০১৬ সালে নূতন করিয়া আবাসিকে গ্যাস সংযোগ দেওয়া বন্ধের নিয়ম করিলেও বিস্ময়করভাবে গত এক বত্সরে তিতাস আবাসিকে গ্যাস সংযোগ দিয়াছে সাত লক্ষ। প্রতিষ্ঠানটির বার্ষিক প্রতিবেদন যাচাই করিয়া দেখা যায়, ২০১৫-১৬ সালে তিতাস গ্যাসের আবাসিক গ্রাহক ছিল ২০ লক্ষ ৬ হাজার। ২০১৬-১৭ সালে এই সংখ্যা হইয়াছে ২৭ লক্ষ। তিতাস কর্তৃপক্ষের মতে, ম্যানুয়ালের জায়গায় ডিজিটাল পদ্ধতিতে গ্রাহক সংখ্যা হিসাব করায় এই পরিবর্তন সাধিত হইয়াছে। কিন্তু এত বিপুলসংখ্যক গ্রাহকের তথ্যে গরমিল থাকাটা কোনো সাধারণ বিষয় হইতে পারে না। হইতে পারে না বিশ্বাসযোগ্যও। যেখানে শিল্প-কলকারখানাগুলি বত্সরের পর বত্সর ধরিয়া গ্যাস পাইতেছে না, কাঁড়ি কাঁড়ি অর্থ বিনিয়োগ করিবার পরও শুধু গ্যাসের অভাবে নূতন শিল্প-কারখানা চালু করা সম্ভব হইতেছে না, সেখানে আবাসিকে নিয়ম ভাঙিয়া গ্যাস সংযোগ দেওয়া কতটা যুক্তিযুক্ত, তাহা নিয়া প্রশ্ন উঠা অস্বাভাবিক নহে।

কোম্পানিটির বার্ষিক প্রতিবেদন অনুযায়ী গত অর্থবত্সরে সিএনজিতে তাহাদের সংযোগ ছিল ৩৩৩, এবারও যাহা একই রহিয়াছে। বাণিজ্যিকে ছিল ১০ হাজার ৯১৭ যাহা এবার মাত্র দুইটি বাড়িয়া হইয়াছে ১০ হাজার ৯১৯টি। ক্যাপটিভে এক হাজার ৮৫-এর স্থলে হইয়াছে এক হাজার ৮৮টি। অর্থাত্ নূতন করিয়া মাত্র তিনটিতে সংযোগ দেওয়া হইয়াছে। আর বিদ্যুতে ৩৮ হইতে ৫টি বাড়িয়া সংযোগ হইয়াছে ৮৩টি। এই যখন অবস্থা, তখন বিনিয়োগের জন্য বারংবার আহ্বান করিলেই কি বিনিয়োগকারীরা আসিবেন? বর্তমানে বিনিয়োগকারীরা কী মাত্রায় জ্বালানি সংকটে ভুগিতেছেন তাহা বলিবার নহে। নূতন অনেক বিনিয়োগকারী গ্যাস সংযোগ না পাওয়ায় উত্পাদনেই যাইতে পারিতেছেন না। তাহাদের বিনিয়োগ নিয়া তৈরি হইয়াছে বড় ধরনের অনিশ্চয়তা। আর যাহারা উত্পাদনে আছেন, তাহাদের অবস্থাও তথৈবচ। কাঙ্ক্ষিত উত্পাদন না হওয়ায় কিংবা উত্পাদনের খরচ বাড়িয়া যাওয়ায় তাহারা ঠিকমত ব্যাংক ঋণ পরিশোধ করিতে পারিতেছেন না। এই অবস্থায় যদি অবৈধভাবে গ্যাস সংযোগ দিবার খবর পাওয়া যায়, তাহা হইলে সংশ্লিষ্ট যে কেহ বিক্ষুব্ধ না হইয়া পারেন না।

২০১০ সালে আবাসিকে গ্যাস সংযোগ দেওয়া বন্ধ করিবার পিছনে উদ্দেশ্য ছিল— কলকারখানায় গ্যাস সংযোগ দিয়া শিল্পায়ন ও অর্থনৈতিক উত্পাদন বৃদ্ধি করা। কিন্তু কতিপয় অসাধু ও অপরিণামদর্শী কর্মকর্তা-কর্মচারীর জন্য ইহার ফল হইল বিপরীত। শিল্প-কারখানা যখন গ্যাসের অভাবে ধুকিয়া মরিতেছে, অন্যদিকে তখন তলে তলে অবৈধভাবে আবাসিকে গ্যাস সংযোগ দেওয়া হইতেছে যথেচ্ছভাবে। ২০১৩ সালে তাহা উন্মুক্ত করিয়া অবৈধ সংযোগকে বৈধতা দেওয়ার সুযোগ তৈরি করা হইয়াছে। আবারও এই সুযোগ দেওয়া হইলে আমরা বিস্মিত হইব না। প্রাকৃতিক সম্পদ গ্যাস নিয়া এই খেলা বন্ধ করিতে হইবে। ইহার আগে তিতাসের হিসাব নম্বরে কয়েক শত কোটি টাকা জমা পড়া এবং ইহার প্রেক্ষিতে কোম্পানিটির আর্থিক শৃঙ্খলা নিয়া যে প্রশ্ন উঠিয়াছিল তাহা অমূলক ছিল না বলিয়াই অনেকের বিশ্বাস। অবৈধ সংযোগ হইতে প্রাপ্ত গ্রাহকের বিল নিয়া অবশ্যই জবাবদিহি করিতে হইবে। আমরা আবাসিকে গ্যাস সংযোগ প্রদানের বিরোধী নই। কিন্তু সবার আগে শিল্প-কলকারখানাকে এই ব্যাপারে গুরুত্ব দেওয়ার পক্ষপাতী। কেননা শিল্পায়ন না হইলে কর্মসংস্থান তৈরি হইবে না। দূর হইবে না দারিদ্র্য। অতএব, যেখানে এই মুহূর্তে কাঙ্ক্ষিত হারে গ্যাসের উত্পাদন বাড়ানো যাইতেছে না, সেখানে গ্যাস সম্পদ ব্যবহারে আমাদের অবশ্যই দূরদর্শিতার পরিচয় দিতে হইবে।

আমাদের ফেসবুক পাতা

© All rights reserved © 2018 DailykhoborBarisal24.com

Desing & Developed BY EngineerBD.Net